কুমিল্লার-১১ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক এমপি ডা: তাহের
- কুমিল্লা সংবাদদাতা
- ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ডা: তাহের ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার জানান, চৌদ্দগ্রাম থেকে ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের নির্বাচন করবেন এটি আমাদের দলের সিদ্ধান্ত। এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সব প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও চৌদ্দগ্রাম দক্ষিণের আমির মাহফুজুর রহমান জানান, ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের কলেজ জীবন থেকে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৮৫-৮৬ এবং ১৯৮৬-৮৭ সেশনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৮৮-৯২ পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল ইসলামী ফেডারেশন অব স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের (আইআইএফএসও) এশিয়ার ডিরেক্টর নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯২-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত আইআইএফএসও-এর ওয়ার্ল্ড কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একই সময়ে দণি এশিয়ার ওয়ামির (বিশ্বব্যাপী মুসলিম যুব পরিষদ) পরিচালক ছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর রিলিফ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিয়েশনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং ইন্দোনিশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. হাবিবির নেতৃত্বে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর সায়েন্স অ্যান্ড এশিয়ার রিজিওনাল পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অধিকারী ডা: তাহের কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসন থেকে নির্বাচন করলে তিনি বিজয়ী হবেন।
ডা: তাহের জানান, চৌদ্দগ্রামের জনগণ বর্তমান সরকারের হামলা, মামলা, নৈরাজ্য, জুলুম, নির্যাতন থেকে বাঁচতে চায়। সুষ্ঠু ভোট হলে এ আসনের প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবো ইনশা আল্লাহ। বর্তমান সরকারের আমলে আমি সাড়ে তিন বছর কারাগারে ছিলাম। সম্প্রতি আমার নামে ১৬টি গায়েবি মামলা হয়েছে। আমার আসনের একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে আমার দলের বিশাল কর্মীবাহিনী রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে চৌদ্দগ্রামের শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা নির্মাণ করব। তরুণদের মাদকের ভয়াবহতা থেকে ফিরিয়ে এনে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলব। চৌদ্দগ্রামের প্রতিটি সড়ক পাকা সড়কে উন্নীত এবং শতভাগ বিদ্যুতায়িত করা হবে।
ডা: তাহের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৮০-১৯৮২ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের নির্বাচিত জিএস ছিলেন।
তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সৈয়দ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাওলানা সৈয়দ মাজহারুল হক এবং তার মা আকসির-ই-জাহান চৌধুরানী বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বিশ্বের ৯১টি দেশ সফর করেন।
নিবন্ধন বাতিল প্রশ্নে জামায়াতের বক্তব্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে দলটি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, নির্বাচন কমিশনের শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর নিবন্ধন লাভ করে। ২০০৯ সালে তরিকত ফেডারেশনের দায়ের করা এক রিট মামলার পর শুনানির জন্য হাইকোর্টের ৩ জন বিচারপতির সমন্বয়ে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠিত হয়। ওইা বেঞ্চে শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বিভক্ত রায় প্রদান করেন। প্রিজাইডিং জজ জামায়াতের নিবন্ধন বহাল রাখার পক্ষে ও অপর দু’জন বিচারপতি নিবন্ধনটি আইন সম্মত হয়নি মর্মে রায় প্রদান করেন। একইসাথে মামলাটির সাথে সাংবিধানিক প্রশ্ন জড়িত বিধায় বিচারপতিগণ আপীলের জন্য সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল (আপিল নং ১৩৯/২০১৩) দায়ের করা হয়। জামায়াতের নিবন্ধন মামলাটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে, এ অবস্থায় মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারির কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নির্বাচন কমিশনের এ প্রজ্ঞাপন জারি উচ্চ আদালতের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের শামিল। আমরা নির্বাচন কমিশনের এ ভূমিকায় বিস্মিত। তিনি প্রজ্ঞাপন জারির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।